নোবেল শান্তি পুরস্কার ২০২৪ নিয়ে দু-চার কথা


গতকাল নোবেল শান্তি পুরস্কার ঘোষণা করা হল। জাপানের পারমাণবিক অস্ত্রবিরোধী সংস্থা নিহন হিদানকিওকে এবার বেছে নেওয়া হয়েছে। নোবেল কমিটির সুপারিশ জানাচ্ছে, এই নোবেল দেওয়ার কারণ - ‘পারমাণবিক অস্ত্রবিহীন এক বিশ্ব গড়ে তোলার প্রচেষ্টা এবং সাক্ষ্যপ্রমাণের মাধ্যমে দেখিয়ে দেওয়া যে, পারমাণবিক অস্ত্র আর কখনোই যাতে ব্যবহার না করা হয়।’


নোবেল শান্তি পুরস্কার নিয়ে আমরা খুব একটা মাথা কোনোদিনই ঘামাই না। তার একটা কারণ, সাহিত্যের নোবেল, বা ভারতীয়/বাঙালিরা জিতলে অর্থনীতির নোবেল নিয়ে জ্ঞানের ব্যাপ্তি দেখাতে পারলে বুদ্ধিজীবী সমাজে কদর বাড়ে। আর সবথেকে বড়ো কারণ? নোবেল শান্তি পুরস্কার একটা অত্যন্ত রাজনৈতিক পুরস্কার। আমরা যেহেতু ‘অরাজনৈতিক’ বলে এক ‘নহি ছাতা, নহি জুতা, নহি আমি কিচ্ছু’ মার্কা ‘রাজনৈতিক’ নিহিলিস্টিক কিম্ভূতকিমাকার প্রাণী, যাদের ব্যক্তিগত আলোচনার পরিসরে বলাই থাকে ‘এই এই পলিটিকাল আলোচনার জায়গা এটা না কিন্তু’, তারা স্বভাবতই এগুলো এড়িয়ে যাবে। 


কিন্তু, কিছুক্ষেত্রে করা দরকার। এবারের পুরস্কারটা নিয়ে বিশেষ করে করা দরকার। কেন?


বিগত বেশ কিছু বছরে, বিশেষ করে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রেসিডেন্সি আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে, আন্তর্জাতিক এজেন্সিগুলো কীভাবে বৃহৎ স্কেলে পুত্তলিকাবৎ হয়ে গিয়েছে। 


JCPOA-থেকে ২০১৮তে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বেরিয়ে যাওয়া এবং ইরান ও তার অ্যালাইদের উপর স্যাংশন চাপানো, আফগানিস্তান থেকে আচমকাই সৈন্য অপসারণ কোনো ডেফিনিটিভ সলিউশনের ব্যবস্থা না করে (ফলস্বরূপ দ্বিতীয় তালিবানি রেজিম) আটকাতে রাষ্ট্রপুঞ্জের অক্ষমতা; মার্কিন-চিন 'ট্রেড ওয়ার' এবং পারস্পরিক শুল্কের হার বাড়ানো (বাইডেনের প্রেসিডেন্সিতে চিন থেকে আমদানিকৃত ইলেক্ট্রিক ভেহিকলের উপর ১০০ শতাংশ শুল্ক চাপানো হয়!) রোধ করতে ডাব্লুটিও-র দৃষ্টান্তমূলক ব্যর্থতা; ২০২০ সালে কোভিড মহামারীকে আটকানো, একটা কম্প্রিহেন্সিভ প্ল্যান অফ অ্যাকশন - এই ব্যাপারে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কী ভূমিকা ছিল, সেটাও দেখা গিয়েছে। সেই ফাঁকে আবার ট্রাম্প হু-এর সদস্যপদ ত্যাগ করেন; ২০১৫-তে ইউনএফসিসিসি-র সিওপি ২১-এ হওয়া প্যারিস চুক্তির বর্তমান অবস্থা, বা ২০২০তে ট্রাম্পের প্যারিস চুক্তি ত্যাগ করা (যদিও বাইডেন তাঁর নির্বাচনী ইস্তেহারে বলেছিলেন যে প্যারিস চুক্তিতে যোগ দেবেন, সেই কথা রাখেনও তিনি) - গ্লোবাল ওয়ার্মিং বা ক্লাইমেট চেঞ্জ আটকাতে এজেন্সির অবস্থা বিশেষভাবে চোখে পড়ে। মজার ব্যাপার, বড়ো বড়ো ‘এমিটার’ দেশগুলোর সেই আর্থিক ক্ষমতা রয়েছে, যা দিয়ে তারা বিপুল পরিমাণ কার্বন ক্রেডিট কিনে নিচ্ছে তুলনামূলকভাবে অনেক কম কার্বন ফুটপ্রিন্ট রাখা দেশের কাছ থেকে, বা তাদের দেশে নানা ‘গ্রিন’ প্রজেক্টে কোটি কোটি ডলার ঢেলে দিচ্ছে। নিজেদের এনডিসি (ন্যাশনালি ডিটারমাইন্ড কনট্রিবিউশন) নিয়ে কেউই ভাবিত নয়। 


এভাবে বলতে গেলে লিস্ট ফুরোবে না। টেরর ফাইনান্সিং আটকাতে এফএটিএফ, আর্থিক কোটার পুনর্বিন্যাস করতে আইএমএফ, তেলের কার্টেলাইজেশন নিয়ন্ত্রণ করতে ওপেক, দক্ষিণ এশিয়া ও ভারতীয় উপমহাদেশে সম্প্রীতির পরিস্থিতি তৈরি করতে সার্ক - সবাই কমবেশি ব্যর্থ। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধোত্তর গ্লোবাল অর্ডারে এজেন্সির যে ভূমিকা ছিল, বা যে ভূমিকা এনভিসাজ করা হয়েছিল, তা বহুক্ষেত্রেই ধূলিসাৎ হয়েছে।


সবথেকে বেশি যে দুটো ঘটনা প্রভাব ফেলেছে, তা হল পৃথক পৃথক ফ্রন্টে চলতে থাকা যুদ্ধ। ডনেতস্ক অঞ্চলে রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধ, গাজা স্ট্রিপ বা লেবাননে চলতে থাকা ইজরায়েলি হানা - এই ন্যক্কারজনক ঘটনাগুলো সবাই মোটামুটি জানেন, তাই বলা নিষ্প্রয়োজন। এই দুটো ঘটনাতে আন্তর্জাতিক এজেন্সিগুলোর ব্যর্থতা রীতিমতো চোখে পড়ার মতো। এই যুদ্ধগুলো, নির্বিচারে চলা গণহত্যা আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে, ১৯৪৫-পরবর্তী অবস্থা কিচ্ছুটি পাল্টায়নি। বরং, আগ্রাসী শক্তিগুলো নিজেদের নখদাঁতকে লুকোনোর নিতুই নব কৌশল শিখে নিয়েছে, শিখেছে মিডিয়া ম্যানিপুলেশনের নিত্যনতুন পদ্ধতি। আক্রমণের নয়া নয়া অপরিকল্পিত পদ্ধতি দেখছি আমরা। আমরা দেখছি, কীভাবে নিরীহ পেজার যন্ত্রে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে গোটা লেবানন জুড়ে(দাবি, শুধুই নাকি ‘হেজবোল্লা’-দের লক্ষ্য করা হয়েছিল) প্যানিক সৃষ্টি করা যাচ্ছে - কোল্যাটারাল হিসেবে বেশ কিছু প্রাণও যাচ্ছে যদিও বা। আন্তর্জাতিক সাপ্লাই-চেন ম্যানেজমেন্টে কী স্তরের অন্তর্ঘাত ঘটাতে পারলে এমনটা করা সম্ভব, বোঝা যাচ্ছে কী? 


যুদ্ধ-বিধ্বস্ত একটা বিশ্বের অ্যাবসার্ডিটি, যার পরতে পরতে মিশে আছে মহামারী-উত্তর কালেক্টিভ ট্রমা, আর্থিক সংকট, বেকারত্ব, অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের দৃপ্ত হুঙ্কার - সেই ঘোরতর সার্বিক অবসাদ আমাদের পাথর করে দিচ্ছে, সূক্ষ্মতর অনুভূতিগুলো বোঁদা হয়ে যাচ্ছে। বাস্তবের পাথর-ঠেলা দুনিয়াকে ছাপিয়ে আমরা খোঁজ করছি এক ডিলিউশনাল দুনিয়ার। ‘ডেলুলুতেই সলুলু’ গোছের জেন-জি ইয়ার্কির গভীরে নিহিত আছে মূলত এই এসকেপিজমই। কনফ্রন্ট করতে করতে আমরা ক্লান্ত, নিজেদের ঘাড়ে বোঝা টানতে টানতে আমরা হতাশ। তাইজন্যই আমরা ঢুকতে চাইছি মেটাভার্সের ভার্চুয়াল রিয়ালিটির জগতে। অল্টারনেটিভ রিয়ালিটি চাই আমাদের। আমাদের চাই রিল-এর ৩০ সেকেন্ডের ডোপামিন বুস্টার। 


এই ক্লান্তি, হতাশার মাঝখানে নিহন হিদানকিও-র নোবেল শান্তি পুরস্কার পাওয়া হৃত বিশ্বাসকে অন্তত আংশিক না হোক, ভগ্নাংশটুকু হলেও ফিরিয়ে দেওয়ার জায়গায় নিয়ে যেতে পারে। সাধারণত, যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে নোবেল শান্তি পুরস্কার দেওয়া হয় না। প্রথম বিশ্বযুদ্ধেও দেওয়া হয়নি, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধেও না। শুধু ১৯১৭-তে রেড ক্রস পেয়েছিল, যুদ্ধে আহত বা যুদ্ধবন্দীদের সেবার জন্য। ১৯৪৪-এও ফের ওরাই পায়, যুদ্ধচলাকালীন মানবিকতা প্রদর্শনের কারণে। সেই রীতি মেনেই এবারেও অনেকেই ভেবেছিলেন, হয়তো নোবেল শান্তি পুরস্কার এবারে স্থগিত রাখা হবে। অথচ, সবাইকে অবাক করেই এই পুরস্কার দেওয়া হয় এমন এক সংস্থাকে, যারা এক কথায় বলতে গেলে ফিনিক্স পাখি।


১৯৫৬ সালে এই সংস্থা তৈরি হয়। তৈরি করেন কারা? মার্কিন পরমাণু বোমার ফলআউট থেকে যাঁরা সারভাইভ করেছেন। হিরোশিমা-নাগাসাকি তো আছেই, তার সঙ্গে রয়েছে ১৯৫৪ সালের ১লা মার্চ বিকিনি অ্যাটলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ১৫ মেগাটনের পরীক্ষামূলক হাইড্রোজেন-লিথিয়াম পারমাণবিক বিস্ফোরণ - যাকে ‘আদর’ করে নাম দেওয়া হয় ‘কাসল ব্রাভো’। এই সারভাইভরদের জাপানি ভাষায় বলা হয় ‘হিবাকুশা’। সেই ১৯৫৬ সাল থেকে শুরু করে তাঁরা পারমাণবিক অস্ত্রের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছেন। জাপান সরকার, রাষ্ট্রপুঞ্জ, অন্যান্য নানা দেশের সরকারের কাছে আবেদন চালিয়ে গিয়েছেন তাঁরা, যাতে বিশ্বের কোথাও আর ‘হিবাকুশা’ তৈরি না হয়। 


এমন এক যুদ্ধ পরিস্থিতি, যেখানে প্রতিটি বেলিগারেন্ট দেশই পারমাণবিক অস্ত্রে বলীয়ান, একটা বোতাম টিপতে যাদের মুহূর্তমাত্র দেরি হবে না - সেখানে দাঁড়িয়ে এহেন এক আন্তর্জাতিক পুরস্কার কি কিছুটা হলেও আস্থা ফিরিয়ে আনে না, যেখানে গোলার বদলে গোলাপ ফুটবে একদিন? 


আরো একটা পরোক্ষ কারণের কথা এখানে বলা যায়। 


আগেই বলা, নোবেল শান্তি পুরস্কার অত্যন্ত রাজনৈতিক একটি পুরস্কার। এমন এমন রাষ্ট্রনায়কদের এই পুরস্কার দেওয়া হয়েছে, যাঁদের পুরস্কার পাওয়া আদৌ উচিত কিনা, সেটা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। তারমধ্যে যে দুজনের নাম খুবই আসে, তাঁরা দুজনেই মার্কিন - একজন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জার, অপরজন মার্কিন রাষ্ট্রপতি বারাক ওবামা। 


ব্রিটিশ-মার্কিন লেখক-সাংবাদিক ক্রিস্টোফার হিচেনস তাঁর ‘দ্য ট্রায়াল অফ হেনরি কিসিঙ্গার’ বইতে লিখছেন, কিসিঙ্গারের বিরুদ্ধে তাঁর অভিযোগ কী কী - 


“1. The deliberate mass killing of civilian populations in Indochina.

2. Deliberate collusion in mass murder, and later in assassination, in Bangladesh.

3. The personal suborning and planning of murder, of a senior constitutional officer in a democratic nation Chile - with which the United States was not at war.

4. Personal involvement in a plan to murder the head of state in the democratic nation of Cyprus.

5. The incitement and enabling of genocide in East Timor.

6. Personal involvement in a plan to kidnap and murder a journalist living in Washington, DC.

The above allegations are not exhaustive. And some of them can only be constructed prima facie, since Mr. Kissinger - in what may also amount to a deliberate and premeditated obstruction of justice - has caused large tranches of evidence to be withheld or destroyed.”


গত বছর কিসিঙ্গার মারা যাওয়ার পরে মার্কিন সাংবাদিক স্পেন্সার অ্যাকারম্যান ‘রোলিং স্টোনস’-এ একটি আর্টিকলে লেখেন, 


‘Kissinger maintained his standing in part by savaging the Eastern Establishment from which he emerged. It was not entirely cynical. Kissinger shared with Nixon a contempt for the “defeatism” and “pessimism” of those who flinched at the unsavory Vietnam War they once supported. He rationalized his purges of the National Security Council bureaucracy and his marginalization of the State Department — measures that made him indispensable to foreign policy, and to Nixon — as protecting American power from those who lacked the confidence to wield it. It is revealing that among those who make U.S. foreign policy, Kissinger’s perspective is not considered ideological.’


মন্তব্য নিষ্প্রয়োজন। 


এই কিসিঙ্গারকে ১৯৭৩ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কার দেওয়া হয়, যেটা নিয়ে বিস্তর জলঘোলা হয়। বিশেষ করে এমন এক সময়ে, যখন ভিয়েতনাম যুদ্ধ একেবারে ফুল সুইং-এ চলছে। এই পুরস্কারকে কি আমরা ‘রাজনৈতিক’ বলতে পারিনা?


আবার, কিসিঙ্গারের এক ‘তথাকথিত সমর্থক’, প্রথম মার্কিন কৃষ্ণাঙ্গ প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাও নোবেল পান। নিপাট ভদ্রলোক এক ইমেজ। তবে, কেন এই কাদা ছোঁড়াছুঁড়ি? 


ঠাণ্ডা যুদ্ধ পরবর্তীতে তথাকথিত ‘বোমারু’ রাষ্ট্রপতি হিসেবে আমরা বুশকেই ধরে থাকি। ৯/১১ এর পরে বুশের ঘোষিত ‘গ্লোবাল ওয়ার অন টেরোরিজম’, ইরাক যুদ্ধ, সাদ্দাম হুসেনের বাথিস্ট সরকারের পতন, ‘অপারেশন রেড ডন’ চালিয়ে সাদ্দাম হুসেনকে বাঙ্কার থেকে বের করে আনা ও এক্সিকিউট করা - এসবই আমাদের জানা। কিন্তু, আমরা কিছু স্ট্যাটিসটিক্স ভুলে যাই। কীরকম?


ওবামা তাঁর দুটো প্রেসিডেন্সি মিলিয়ে মোট ৫৬৩টা ড্রোন স্ট্রাইক ঘটান মিডল-ইস্ট, পাকিস্তান মিলিয়ে। বুশ মাত্র ৫৭টা। ওবামার প্রেসিডেন্সির প্রথম বছরে তিনি শুধু পাকিস্তানেই ৫৪টি ড্রোন স্ট্রাইক করান। বহু, বহু সিভিলিয়ান হতাহত হয়। শুধু দুটো বছরে পাকিস্তানেই ১৩০-এর উপর সিভিলিয়ান মারা যায় তাঁর বোমাবাজিতে। ২০১০-১১ সালে ইয়েমেনেও যথেচ্ছ বোমাবর্ষণ করেন তিনি। আফগানিস্তানেও। ডবল-ট্যাপ ড্রোন স্ট্রাইক - যেখানে প্রথম স্ট্রাইকের বেশ কিছুক্ষণ পরে আবার দ্বিতীয় স্ট্রাইক করা হয়, যাতে সিভিলিয়ান, স্বাস্থ্যকর্মী, উদ্ধারকর্মীরাও আহত হন - তাতে ওবামা বিশেষ পারদর্শী ছিলেন। 

ওবামা ২০০৯ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কার পান। কিসিঙ্গারের মতো আউটরেজ না হলেও, ওবামার ক্ষেত্রেও নোবেল শান্তি পুরস্কারের ব্যাপারটা খুবই প্রশ্নসাপেক্ষ হয়ে দাঁড়ায়। আবারও, অত্যন্ত রাজনৈতিক একটি সিদ্ধান্ত, বোঝাই যাচ্ছে। 

সমরাপরাধের রক্ত যাঁদের হাতে রয়েছে, তাঁদের নোবেল শান্তি পুরস্কার দেওয়ার মধ্যে যে ভাগ্যের ও সমকালের পরিহাস লুকিয়ে রয়েছে, তারই বিপ্রতীপে দাঁড়িয়ে রয়েছে নিহন হিদানকিও-র নোবেল পাওয়া। একদিকে প্রথম পরমাণু বোমার আঘাত হেনে লক্ষ লক্ষ লোককে হত্যা করা একটা দেশের এমন দুই রাষ্ট্রনায়ক, যাঁদের কীর্তিকলাপ লিখতে বসলে ফুরোবে না - আরেকদিকে এমন এক দেশ, যারা সেই প্রথম পরমাণু বোমার আঘাতে জরাজীর্ণ হয়ে আস্তে আস্তে উঠে দাঁড়িয়েছে। চেষ্টা করেছে, যাতে আর বিশ্বজুড়ে হিবাকুশা কোথাও না থাকে। 

এই বিপ্রতীপ সিদ্ধান্তের মধ্যে নিহিত রয়েছে যে ন্যাচারাল জাস্টিসের সম্ভাবনা, সেটা কি খুবই কষ্টকল্পিত? বিশেষ করে সবাই যখন ‘জাস্টিস’-এর দাবিতে রাস্তায় নামছি?

প্রসঙ্গত, নিহন হিদানকিও, যারা ফিনিক্স পাখির মতো পারমাণবিক ফলআউটের ছাইয়ের থেকে ফের ডানা ঝাপটে ওড়বার শক্তি সঞ্চয় করেছে, তাদের লোগো হচ্ছে একটা ওরিগামির পাখি। :)

Comments

Popular Posts